যুধিষ্ঠির কিম্বা অ্যানার্কিস্ট _ অ-মাওবাদী

প্রমিত



সরকারি চাকরির ইন্টারভিউ। নীল জিন্সের সাথে কালো টি-শার্টটাই বার করলাম। টি-শার্টটার বুকে সাদায় লেখা – ‘কিল দ্য কিলারস’। ছোটবেলায় ছবি আঁকতে গিয়ে দেখতাম – প্যালেটে ‘লাল’ আর ‘সবুজ’ রঙ মেশালে কালো রঙই হত বোধহয়!

কাস্তে চালানোর সময় নয়, ভাগ্যিস কোনো এক সবুজ দিনে কিম্বা রাতে মা-বাবা... মানে... ইয়ে করেছিল! পিসি বলেছে পরিবর্তনের দিনে কনসিভড্‌ হওয়ায় বেঁচে গেছি! যারা ‘ছাড়পত্র’ পায়নি তার দায় তাদের বাবা-মা’র ‘বৌদ্ধযুগীয়’ কার্যকলাপের! দেখো আমি বাড়ছি – পিসি!

খেতে পেতাম না তখন। বলল পেট ভরে খেতে পাবে। এখন বুঝি – তখনকার মহারাণীর ছাপ মারা দশ টাকার নোট আর এখনকার পেট ভরা খাবার – দুটোই আমার স্বপ্নের প্রান্তসীমা! ভাবছি পরের বার এলে প্রশ্ন করবো – আশা করি জেলে অন্ততঃ না খাইয়ে রাখবে না!

লন্ডনমুখী লণ্ঠনের মেলা – ফ্লাডলাইটে খেলা। ফুটপাথের জমজমাট রক্ষণ – হকার আর গর্তের সযত্ন সংরক্ষণ! হোঁচট খেয়েও সামলে নিলাম – অনেকটা মারাদোনার মতন! উল্লাসে রঙ বদলালো রেলিং – আর্জেন্টাইন সাদা-নীলে...!

রাত দেড়টা। লাল-নীল আলোয় প্রতি মুহূর্তে রঙ বদলায় সিগারেটের ধোঁয়া। সামনে জিন্স আর টাইট টপের মাঝে সাদা চামড়ার ঝিলিক। নেশার ঝোঁকে আগুন চড়ছে মাথায়। একবার শুধু পিছনের পকেটের পার্সে দেখে নিলাম – ‘কুড়ি হাজার’ টাকা আছে তো!

আমার বাবার নাম রামগরুড়। হাসির কথা শোনা বা বলা আমার মানা। কার্টুন দেখা মায় ফেসবুকে তাকে লাইক করা আমার ঘোরতম অপছন্দ। শুধু মাঝে মাঝে ডান হাতে বুকের বাঁদিক আলতো চাপড়ে বলি – “অল ইজ ওয়েল” -- ভালো আছি আমরা!

ছোটবেলায় অংকে একশো পেতাম! সবাই বলতো খুব বুদ্ধি। বড় হয়ে তাই বুদ্ধিকেই জীবিকা করলাম – দুএকটা র‍্যালিতে পা-ও মেলালাম। কিন্তু দিন বদলের হিসাব মেলাতে গিয়ে দেখলাম d(পরিস্থিতি)/dx = 0,  আমি = মাওবাদী!




*******
লেখকের সম্পর্কে জানতে এই পাতায় আসুন

2 comments: