আমার শোলে-বেলা
শমীককুমার ঘোষ
বয়স তখন অল্প।
বাড়িতে আদ্যিকালের দরজা-খোলা টিভি। সাদা কালো, সাদামাটা।
কোম্পানির নামটা আজ মনেও পড়ে না। টেলেরামা কি? দুটি চ্যানেল
সাকুল্যে- দূরদর্শন আর কী যেন একটা। তা-ও আবছা।
ইস্কুল থেকে ফিরেছি। বিকেলের খেলা সাঙ্গ। সন্ধে
নেমেছে মধ্য কলকাতার মধ্যবিত্ত পাড়ায়। ঘরে ঢুকে দেখি মা উল বুনছেন, ঠাকুমা কাগজ
পড়ছেন আর বাবা মন দিয়ে কী একটা সিনেমা দেখছেন।
পরিষ্কার মনে পড়ছে দৃশ্যটা। --- আধময়লা জামাকাপড়
পরা দাড়িওলা একটা লোক ময়লা ব্যাগ থেকে কী সব বের করে হাতে ডলছে, মুখে পুরছে,
আর ওয়াক থু বলে থুথু ফেলছে। একে তাকে ‘আরে এ সাম্বা,
এ কালিয়া’ বলে ডাকছে, মাঝেমাঝে
হাসছে, রেগেও যাচ্ছে।
সে সব ভুলে আপন মনে খেলছিলাম মাটিতে বসে। হঠাৎ চোখ
তুলে দেখলাম সাদা শাড়ি পরা একটি মেয়ে আর গায়ে চাদর দেওয়া সাদা চুলওলা একটা লোক।
খানিক পরে নজরে এলো গাঢ় রঙের গেঞ্জি পরা ইয়া
লম্বা-তাল-ঢ্যাঙা একজন এক বয়স্কা মহিলাকে কী সব বোঝাচ্ছে গম্ভীর গলায়। আর জলের
ট্যাঙ্কের ওপর থেকে একটা মুশকো জোয়ান ‘গাঁও-ওয়ালো, সুসাইট সুসাইট’
বলে চেঁচাচ্ছে।
সব ছাপিয়ে মনে ধরে গেল গেঞ্জি-পরা লোকটাকে, একা বসে মুখে
বাঁশির মতো কী বাজাচ্ছে। মন-উদাস-করা করুণ একটা সুর। সেই লোকটাই তার পরে একা
কতগুলো ঘোড়ায় চড়া দুষ্টু লোকের সঙ্গে লড়াই করতে করতে মরে গেল।
বাবাকে জিজ্ঞেস করেছিলাম, ‘যে মরে গেল,
সে কে গো ?’ বাবা ভক্তিভরে বলেছিলেন, ‘ওঁর নাম অমিতাভ বচ্চন’। আমি বললাম, ও অমিতদা বচ্চন। এক বার, বার বার। এবং সারা ছোটবেলা
তাঁকে ‘ভক্ত-আমি’ অমিতদা বলেই যাব।
তাঁর গলা নকল করে বাঁ হাতে খেলনা বন্দুক ধরব। স্কুলজীবন ধরে খুঁজে যাব সেই পয়সাটা
যার দু-দিকেই হেড, সব সময় টসে জিতে যাওয়ার স্বপ্ন নিয়ে।
এবং বড় হয়ে জীবন এবং টিভি রঙিন হওয়ার পরে দেখব, লোকটার গেঞ্জির
রং লাল। জানব, চরিত্রটার নাম জয়। যে জয়কে পরে আনন্দ-এ দেখে
বাবাকে ছেলেমানুষি আনন্দ নিয়ে প্রশ্ন করব, ‘অমিতদা বেঁচে আছে
? ওই সিনেমাটায় যে মরে গেছিল?’
আরও বড় হয়ে পেশাগত সাংবাদিক হওয়ার সুবাদে সেই
অমিতাভ বচ্চনের সান্নিধ্যে এসে তাঁর পাশে বসে বলব, “আপনার কাছে আমার খুব মাউথ অর্গান
শেখার শখ ছিল ছোট থেকে”। সেটাও তো ওই সিনেমাটা দেখেই।
ওই সিনেমাটাই তো বদলে দিল আমার ছেলেবেলা।
অল্প বয়সের অবহেলায় বলা ‘ওই সিনেমাটা’
যে ভারতের সিনেমা জগতের ইতিহাসে প্রথম তিনটের একটা, এটা জানতে অনেক দিন লেগে গেছিল। কচি বয়সে নামটাও তো জেনে নিতে পারিনি।
কত বার দেখেছি শোলে আমার তেত্রিশ বছরে? ১০ বার, ১৫ বার, নাকি বেশি ? গুনে নিতে
পারিনি।
ছোটবেলায় সেই সময়টায় তেমন স্বপ্ন দেখতে শিখিনি, তাই ড্রিম গার্ল
হেমা মালিনিকে দেখতেই পাইনি যেন। বড় হয়ে দেখলাম। বসন্তীকে। দেখলাম হেলেনকে।
দেখালেন, জালাল আগা। মেহবুবা মানে বুঝলাম। শোনালেন পঞ্চম দা।
যেমন শোনালেন, ‘ইয়ে দোস্তি, হম নেহি
তোড়েঙ্গে’ চির-কিশোর কুমার আর মান্না দে। তাই তো বন্ধুত্ব গাঢ় হলেই মন খুঁজত সেই
ক্যারিয়ার লাগানো ‘এম.ওয়াই.বি ৩০৪৭’ নম্বরের
ইয়েজদি নাকি এনফিল্ড মোটরসাইকেলটা, আর রাহুল দেব বর্মণের
সুর।
আর দেখলাম গব্বরকে। আবার। বুঝলাম, আমজাদ খান নন,
আজীবন লোকটাকে গব্বর সিং নামেই মনে রাখব, আরও
পাঁচ-দশ কোটি ভারতীয়র মতো, যাঁদের কাছে শোলে মানেই গব্বর,
আমজাদ মানেও গব্বর। দাড়িওলা, নোংরা, ভয়ঙ্কর, নির্মম ডাকাত। ইয়া ভিলেন, যার উচ্চতাকে মোগাম্বো, শাকাল হ্যান ত্যান (রাম
গোপাল বর্মার আগ-এ অমিতাভ বচ্চনের রোলটাকে ধর্তব্যের মধ্যে আনলামই না। সরি বস্।
গব্বরকে নকল করা মুশকিল হি নেহি, নামুমকিন হ্যায়। শোলের
রিমেক জাস্ট হয় না।) কেউ কোনও দিন মাপতেই পারবে না। ছাপিয়ে যাওয়া দূরে থাক। জানতে
পারবো, গব্বরকে দেখে বাঙালি যুবকরা খৈনি খেতে শিখেছিল। একটা
ময়লা ছোট থলে ভেঙে দিয়েছিল শ্রেণি বৈষম্য। বড়লোক, গরীবলোক,
সকলের পকেটে দেখা যেত সেই থলে। স্টাইল স্টেটমেন্ট খৈনির থলে।
টাই-পরা বাবুও ঠেলাওলা রিক্সাওলার কাছ থেকে নির্দ্বিধায় খৈনির ভাগ নিত। আজও নেয়
(গব্বরীয় খৈনির সঙ্গে শুধু যোগ হয়েছে গোবিন্দা-মার্কা গুটখা)।
কিন্তু গব্বর রয়ে গেছেন গব্বরেই। ‘ইয়ে হাত মুঝকো দে
দে ঠাকুর’, ‘কিতনে আদমি থে’, ‘আব আয়েগা
মজা খেলকা’-- আমার কান থেকে ইহজন্মের মতো আর বেরোবে না।
যাঁরা শোলে দেখেছেন, ভালবেসেছেন, মজেছেন
এবং ডুবেছেন, ১৯৭৫ সাল থেকে তাঁদের কারও কানে ম্যাকমোহনের ‘পুরে পচাশ হাজার’, আজও বাজে। কিংবা ‘ম্যায়নে আপকা নমক খায়া হ্যায় সর্দার’,-- ‘আব গোলি খা’। ‘তুম গব্বর কো নেহি মারোগে’, ‘ইন কুত্তো কে সামনে মত নাচনা বসন্তী’, কিংবা ‘তুম
অগর এক মারোগে তো হম চার মারেঙ্গে’ – যেন একেকটা অ্যাটম
বোমা। এই সব সংলাপ লেখার সময় সেলিম-জাভেদ জুটি একবারও কী ভেবেছিলেন, এগুলোই শোলে-কে কাল্ট সিনেমার পর্যায়ে তুলে নিয়ে যাবে?
‘ইতনা সন্নাটা কিয়ুঁ হ্যায় ভাই?’ কেন মনে পড়ে যায় সংলাপটা এ কে হাঙ্গল মারা যাওয়ার খবর শুনে? বুকের
মধ্যেটা কী রকম নিস্তরঙ্গ হয়ে যায় এখনও। চোখের সামনে ভেসে ওঠে, অন্ধ মানুষটার পুত্রশোকের যন্ত্রণা। আবার তার পরেই ধীর লয়ে লাঠি হাতে
মসজিদের দিকে তাঁর এগিয়ে যাওয়া নমাজ পড়ার সময় হয়ে গেছে বলে। অবতার কিষণ হাঙ্গল তো
এই একটা সিনেমায় অভিনয়ের জন্যই অমর হয়ে গেলেন।
দেশ-কালের গণ্ডি পার হয়ে শোলে-র সাবেকিয়ানা তাই
সংলাপে।
শুধু কী সংলাপ! শোলে-র কালজয়ী সাফল্যের কারণ যে আরও
আছে।
একটা মূল গল্পের মধ্যে কতগুলো ছোটগল্প। প্লট আর
সাবপ্লট। জয়-বীরু-র বন্ধুত্ব, বসন্তী-বীরুর প্রেম, জয়-বীরুর অপরাধী
সত্ত্বা, ঠাকুরের পরিবারের মৃত্যুর বদলা নেওয়া, জয় আর ঠাকুরের বিধবা পুত্রবধূর নিঃশব্দ প্রেমের পরিণতি না পাওয়া, ডাকাত-সর্দার গব্বর সিংহের ভয়-না-পাওয়া, নিমেষে সব
ফুৎকারে উড়িয়ে দেওয়া, পাশবিক নৃশংসতা।
সঙ্গে যোগ্য কাঠামো গড়েছে অসম্ভব মনকাড়া ছোটবড়
চরিত্র। সবই সমান গুরুত্বপূর্ণ। কোথাও যেন কিছু অতিরিক্ত নেই। মেদহীন ছিপছিপে। বরং
সিনেমাটায় যা যা রসদ রয়েছে,
তার বাইরে কিছু হলেই বেখাপ্পা তাল কেটে যেত মনে হয়।
ঠাকুর, জয়-বীরু, গব্বর,
বাসন্তীকে ছেড়ে দিলাম। ইংরেজ আমলের জেলার আসরানি, কালিয়া, সাম্বা, এমনকি ধান্নো —
কাউকে কী ভোলা সম্ভব। কাউকে বাদ দিয়েই শোলে সম্পূর্ণ হয় না। এবং
অন্য দিকে যতবারই দেখি না কেন, কখনওই মনে হয় না একটা দৃশ্যও
অতিরিক্ত রয়েছে ২০৪ মিনিটের এই চলচ্চিত্রে (যদিও ভায়োলেন্স-এর জন্য প্রথমে ১৮৮
মিনিটের ছবি মুক্তির অনুমতি দিয়েছিল সেন্সর বোর্ড)।
এর জন্য বাহবা পাবেনই পরিচালক রমেশ সিপ্পি। অসাধারণ
বুনোট, জমাট ব্যালান্স। এক দিকে ব্যাকগ্রাউন্ড মিউজিকের আধিক্য গুলির লড়াইয়ের
দৃশ্যে। আবার যেখানে ঠাকুরের পরিবারকে একেক পর এক বুলেটে শেষ করে দিচ্ছে গব্বর,
তার পরেই নৈঃশব্দ্য। শ্মশানের স্তব্ধতায় বাকরুদ্ধ হয়ে যায় দর্শকও।
এবং রচনা হয় রামগড়ের আবহে বিপ্লবের ইতিহাস।
যে ইতিহাস ঘাঁটলে দেখা যায়, জি পি সিপ্পি সেই
আমলে ২ কোটি টাকা দিয়ে এই ছবি বানিয়েছিলেন ছেলে রমেশের পরিচালনায়। শোনা যায়,
ব্যাঙ্গালোরে একটি শটের শুটিংয়ে জন্য গেছিল পুরো ইউনিট। সঞ্জীবকুমার,
ধর্মেন্দ্র, অমিতাভ, হেমা,
জয়া ভাদুড়ী (বচ্চন), আমজাদ সকলেই হাজির।
কিন্তু প্রকৃতি বিমুখ। বৃষ্টি হয়েই চলেছে টানা। অভিনেতারা হোটেলে বসে। ধর্মেন্দ্র
হেমা-র প্রেম তখন মধ্যগগনে। এ দিকে জয়া তখন প্রথম বার সন্তানসম্ভবা। তাঁকে নিয়ে
আহ্লাদিত অমিতাভ। খানাপিনা-আড্ডা - সবই হচ্ছে, শ্যুটিং বাদে।
রমেশের মুখ ভার।
হঠাৎ প্রোডাকশন ম্যানেজার খবর আনলেন, যে রকম লোকেশন আর
আবহাওয়া চাইছেন পরিচালক রমেশ, তা মিলবে লন্ডনের কাছে একটা
জায়গায়। ব্যাস, রমেশ আর জিপি-র নির্দেশে পরের দিন পুরো ইউনিট
পাড়ি দিল লন্ডন।
আরও আছে। ইংল্যান্ড থেকে বহুল খরচ করে অ্যাকশন
বিশেষজ্ঞদের পুরো টিম এনেছিলেন রমেশ আর জিপি। ভারতীয় সিনেমায় সেই প্রথম বার।
তাঁদের তত্ত্বাবধানে সঞ্জীব, ধর্মেন্দ্র, অমিতাভ, আমজাদ ফাইট সিকোয়েন্স করতেন নির্ভাবনায়। এবং এই ফাইট আর অ্যাকশন-সিন শোলের
জিয়নকাঠি।
১৯৭৫-এর ১৫ আগস্ট মুক্তি পায় এই ছবি। শুক্রবার, শনিবার, ভাল চলছিল না ছবি। অনেকে বলেন, ছবির শেষে জয়ের
অর্থাৎ অমিতাভ বচ্চনের মৃত্যুই এই ছবির অভিশাপ। আনন্দ, জঞ্জির
খ্যাত অমিতাভকে ট্র্যাজিক হিরো হিসেবে নিচ্ছে না জনতা। তাই শোলে চলছে না। অতএব,
সকলে তৈরি হন ছবির ক্লাইম্যাক্স আবার শ্যুট করতে। অমিতাভকে বাঁচিয়ে
রেখে শেষ করা হবে শোলে। সোমবারে আবার মুক্তি পাবে বদলে যাওয়া শোলে। কী ভেবে একটা
দিন অপেক্ষা করেছিলেন রমেশ সিপ্পি।
ভাগ্যিস করেছিলেন। ভাগ্যিস জয়কে বাঁচিয়ে তোলেননি।
না-হলে দেশের বেশ কিছু হলে শোলে টানা ৫ বছর চলে
মুঘল-এ-আজমের রেকর্ড ভাঙতে পারত না। শোল-র আগুন ৩৭ বছর ধরে জ্বলত না। ৩৭ বছর পূর্তি
উপলক্ষে শোলেকে এ বছর থ্রি-ডি করে ফের রিলিজ করানোর কথা ভাবতে পারতেন না রমেশ
সিপ্পির নাতি শান উত্তম সিংহ এবং তাঁর ডিস্ট্রিবিউটার সঙ্গী জয়ন্তীলাল গাডা।
শোলে তো আজ মিথ। শোলে আজ মহীরুহ। শোলে আজও ঝকঝকে, আনকোরা।
সে তো আম-জাম-আদমিরা বলে। যাঁরা আবেগ-সর্বস্ব
শোলে-প্রেমী, শোলে-অন্ত-প্রাণ। যাঁরা শোলের গল্পে সাধারণ মানুষের জয়ের গল্প খোঁজেন।
যাঁদের কাছে শোলে সমাজ-বিপ্লবের একটা প্রেক্ষাপট। রক্ষক হোক, বা ভক্ষক – শোষক তো সকলেই। আম-মানুষরা তাই জয়-বীরু
হতে চেয়েছে চিরটা কাল। শোলে তাদের সব প্রজন্মকে স্বপ্ন দেখাবে নিরন্তর।
এ হেন শোলে-ই আবার কারও কাছে ‘নেহাতই জমজমাট,
মজাদার একটা ছবি’। শোলে হলিউডি দ্য ম্যাগনিফিসেন্ট
সেভেনের নকল, রিমেক, এ কথাও প্রচলিত। “শোলে খুব আহামরি সিনেমা নয়”, প্রসঙ্গটি তুলছেন
ভারতের সর্বকালের অন্যতম সেরা অভিনেতা নাসিরুদ্দিন শাহ। এক সাক্ষাৎকারে সম্প্রতি
কী বললেন তিনি? বললেন, “অমিতাভ বচ্চন
ভাল অভিনেতা। কিন্তু একটাও ভাল ছবি তিনি এখনও করেননি। শোলেকে যদি তাঁর সেরা ছবি
বলতে হয়, তা হলে দুর্ভাগ্য। শোলে মজার সিনেমা, বেশ উপভোগ্য। কিন্তু এমন দারুণ কিছু না। তার চেয়ে দেব আনন্দের গাইড-এর কথা
বলা যাক। সেটি ভারত কেন, বিশ্ব চলচ্চিত্রের অন্যতম সেরা ছবি”।
পাঠক বিচার করবেন এ সব বাতুলতা, নাকি
সত্য-সমালোচনা।
কিন্তু ছেঁকে নিলে কী নির্যাস মিলছে, যেটি নাসির
না-চেয়েও বলে ফেলেছেন। বলে ফেলেছেন, শোলে অমিতাভর সিনেমা।
অমিতাভর শোলে। ৩৭ বছরে একটা জিনিস প্রতিষ্ঠিত হয়ে গেছে অদ্ভুত ভাবেই।
কলকাতার এক পাঁচতারা হোটেলের প্রেসিডেন্সিয়াল
স্যুইটে একেবারে নিভৃতে,
নিরালায় ওয়ান-অন-ওয়ান একটি সাক্ষাৎকারে তাঁকে জিজ্ঞাসা করেছিলাম,
“এক দিন শোলে ছিল সঞ্জীবকুমারের, ধর্মেন্দ্রর,
গব্বরের। আজ শোলে আপনার। শুনতে কেমন লাগে?”
খুব কুণ্ঠিত হয়ে আমার কাঁধে হাত রেখে অমিতাভ বচ্চন, মানে আমার
ছেলেবেলার অমিতদা সেই জলদগম্ভীর স্বরে বিনম্র হয়ে বলেছিলেন, “এ বাবা, না না। এগুলো বাড়াবাড়ি করছ তুমি শমীক। শোলে আজও গব্বরেরই, ঠাকুরেরই, বীরুরই। চিরকাল তাই থাকবে। জয় সেখানে ঠাঁই
পেয়ে বর্তে গিয়েছিল। শোলের মতো এক অসামান্য এন্টারটেইনিং সিনেমার অংশ হতে পেরে আমি
এবং জয়া নিজেদের ভাগ্যবান মনে করি সব সময়”।
হয়তো বিনয়, হয়তো বা সত্যি।
শোলে একামেবাদ্বিতীয়ম।
২০১২-এ ডার্টি পিকচার জানিয়েছে, সিনেমা নাকি
তিনটি শব্দের জোরে চলে- এন্টারটেনমেন্ট, এন্টারটেনমেন্ট,
এন্টারটেনমেন্ট।
জবর খবর বটে। জোরদার ঘোষণা।
শোলে কিন্তু ১৯৭৫ সাল থেকে আজ পর্যন্ত, প্রতি মুহূর্তে,
সগর্বে প্রমাণ করে চলেছে, সিনেমা ওই মাত্র
শব্দের জোরেই চলে।
এই ছবিটা হলে দেখে বেজায় আনন্দ পেয়েছিলাম। ২ টো উপলব্ধি হয়েছিল। এক, রিলিজ করার ২০ বছর পরে একটা সিনেমা পুরোনো হয়ে যায় না, বস্তাপচা নতুন সিনেমা দেখার থেকে মানুষ পরীক্ষিত পুরনো সিনেমা দেখা পছন্দ করেন। আর দুই, আমার বাবা, যিনি রিলিজ করার সময় এ সিনেমা দেখেন নি, অপসংস্কৃতির ধুয়ো দিয়ে, তিনি আমাদের সাথে দেখতে গেছিলেন। ব্যাপারটা কি? অপসংস্কৃতি সময়ের পরীক্ষা উতরে অ্যাদ্দিন টিকলো কি করে?
ReplyDeleteকথার পি আর বিভাগকে আরেকটু মাথা ও শরীর খাটাতে হবে, কমেন্ট কই?
কথার পি.আর. বিভাগ এখন non-existent... সেটা যে সামলাতো, সে অন্য কাজে ব্যস্ত- আর কোন এক অজ্ঞাত কারণে বাকি সব বিভাগ বন্ধ হয়ে পড়ে আছে। 'কথা' যে চলছে, এটা এক আশ্চর্য!
Deleteতাই কমেন্টের দায়িত্ব আপাতত পাঠকদের শুভবুদ্ধির ওপর ছেড়ে দিয়ে চেষ্টা চলছে যাতে এই এডিশনটা সুষ্ঠুভাবে পুরোটা নামানো যায়। বাকি... জয়ত্তারা!! :D